শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৬ অপরাহ্ন
মাওলানা দৌলত আলী খান:
সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ সংস্কারক মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) দুনিয়াতে সভ্যতার বীজ বপন করার জন্য প্রেরিত হয়েছেন। তিনি প্রাক ইসলামী যুগের সব অসভ্যতা ও কুসংস্কারকে সমাজ থেকে বিতাড়িত করেছেন। আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে অনন্য অবদান রেখে গেছেন মহানবী (সা.)। আজ রাসুলের (সা.) এই আদর্শ লালনে মুসলিম উম্মাহ অনেক পিছিয়ে। থার্টিফার্স্ট নাইট বা নববর্ষ উৎযাপনের নামে মুসলমানদের আদর্শকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে।
থার্টিফার্স্ট নাইট- এটি কোরআন ও হাদিসের কোনো বাণী নয়। দার্শনিক, জ্ঞানগুরু ও মনীষীদের মহা মূল্যবান কথাও নয়। শুধু সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতির একটি শিরোনাম। এর ব্যানারে অশ্লীল ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকে। বর্ষবরণ পবিত্র নাম দিয়ে অপবিত্র ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডে মেতে ওঠে তরুণ-তরুণীরা। ফলে নববর্ষের শুভযাত্রা শুরু হয় অসভ্যযাত্রায়।
বর্ষবরণ কোনো ধর্মের ধর্মীয় বিধান নয়। ইবাদত বা উপাসনাও নয়। এরপরও থার্টিফার্স্ট নাইট-এর এত গুরুত্ব কেন? কেন বার বার বর্ষবরণ নামে সামাজিক বিধান ও ইসলামি আদর্শকে ধ্বংস করা হচ্ছে? আজ সভ্য জাতি অসভ্য জাতিতে পরিণত হচ্ছে। যার পরিণাম জ্বলন্ত আগুনের কুণ্ডলী জাহান্নাম। এখন আমাদের বুঝতে হবে যে, থার্টি ফার্স্ট নাইট মানে প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণ করা। দুষ্কর্মের অনুসরণ করা।
সমাজ থেকে অসভ্যতাকে দূরীভূত করে সভ্যতাকে প্রতিষ্ঠা করেছে একমাত্র ইসলাম। সুতরাং মুসলিম উম্মাহকে ইসলামের অনুকূলে অবস্থান করেই আধুনিকতাকে গ্রহণ করতে হবে। কোনো মুমিন আল্লাহর আদেশকে ভঙ্গ করে অপসংস্কৃতিকে গ্রহণ করতে পারে না। আর আল্লাহর আদেশ ভঙ্গকারীদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর যারা আল্লাহর সাথে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হবার পর তা ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখতে আল্লাহ আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায় তাদের জন্যে আছে অভিশাপ এবং তাদের জন্যে আছে মন্দ আবাস। (সুরা রায়াদ : ২৫)
ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন করার জন্য কোনো মুসলিম তরুণ-তরুণী হোটেলে যেতে পারে না। প্রবৃত্তির শখে স্বশরীরে কোনো বিনোদন কেন্দ্রে অসামাজিক কাজে জড়াতে পারে না। কোনো কনসার্ট ও গান-বাজনায় লিপ্ত হতে পারে না। রাস্তায় বের হয়ে মদ পান করতে পারে না। যাদের অন্তরে ঈমানের আলো আছে ‘থার্টিফার্স্ট নাইট’ তাদের জন্য নয়। তাদের এই দিন উল্লাসের নয়, তাদের এই দিন হিসাবের দিন।
যারা ইসলামের অনুসারী ও আল্লাহ ভীরু, তারা নিজেদের দফতর খুলে বসে হিসাব নিয়ে- কী করেছি? কি করা উচিৎ ছিল। খারাপ কাজের জন্য তওবা করি এবং ভালো কাজের জন্য প্রতিজ্ঞা করি। ইসলামে থার্টিফার্স্ট নাইটের কোনো স্থান নেই। নববর্ষ উৎযাপন ইসলাম সমর্থন করে না। এই কুসংস্কার ও কুপ্রথা হল জাহিলি যুগের। রাসুল (সা.) সবসময় কুসংস্কারকে ঘৃণা করতেন। তিনি সমাজ থেকে অপসংস্কৃতিকে দূরীভূত করার জন্য প্রেরিত হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা আমাকে পৃথিবীবাসীর জন্য রহমত ও পথপ্রদর্শক হিসেবে পাঠিয়েছেন। আর আমার সেই মহাপরাক্রমশালী প্রভু সর্বপ্রকারের ঢোল ও যাবতীয় বাদ্যযন্ত্র, দেব-দেবীর মূর্তিসমূহ, শূলী ও ক্রুশ এবং জাহিলি যুগের কুপ্রথা ও কুসংস্কার নির্মূল ও ধ্বংস করার জন্য আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। (আহমদ)
লেখক : শিক্ষক, নাজিরহাট বড় মাদ্রাসা, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।০১৮১৫-৯১৩৫০৭
ভয়েস/আআ